The Power,,,S1
লেখকঃ- Amran Hossain
পর্বঃ-১১
দ্বীপক যে কিনা এখনো তাঁর মাথা চেপে ধরে বসে আছে এখনো, তাঁর কাছে মনে হচ্ছিলো তাঁর মাথা ভিতর থেকে ফেঁটে যেতে চাচ্ছে। এতো গুলো স্পেল একসাথে নেওয়ার ফলে এই অবস্হা হচ্চিলো তাঁর, দ্বীপকের চোখ একদম লাল হয়ে আছে। তাঁর মাথায় হাজার হাজার স্পেল ঘুড়ে বেরাচ্ছিলো, স্পেল গুলো জেনো জীবিত।
দ্বীপকের নাক থেকে রক্ত বের হচ্ছিলো যা টপ টপ করে পড়ছিলো নিচে, এক ফোঁটা রক্ত তাঁর বাম হাতে থাকা ব্রেসলেইটে গিয়েও পড়ে আর তখন ব্রেসলেইট থেকে একধরনের আলো বের হতে থাকে যা দ্বীপক খেয়াল করে নিই। একসময় দ্বীপক অনুভব করে তাঁর মাথায় এতোক্ষন যে চাপটি ছিলো তা এখন হঠাৎ করেই গায়েব হয়ে গিয়েছে,তাঁর শরীরকে একদম হালকা মনে হলো ঠিক যেমনটা হয় কোনো ভারী জিনিষ হাত থেকে রাখার পরে। দ্বীপক ওয়াশরুমে চলে আসে রক্ত গুলো পরিষ্কার করার জন্য, এখন তাঁকে তৈরি হতে হবে ক্লাস করতে যাওয়ার জন্য। যেহেতু দ্বীপকের কাছে বেশি সময় নেই তাই সে দ্রুতই তৈরি হয় যায় এবং সকালের নাস্তা করার উদ্দেশ্যে ক্যান্টি চলে আসে। দ্বীপক এই সময় একটি জিনিষ খেয়াল করে নিই আর তা হলো তাঁর বাম হাতে থাকা ব্রেসলেইট থেকে এক ধরনের সোনালী আলো বের হচ্ছিলো যা তাঁর হাতের মাধ্যমে পুরো শরীরের যাচ্ছিলো।
এই যে ধরুন আমরা অসুস্থ হলে ডাক্তার আমাদের স্যালাইন দেয়, অনেক সময় স্যালাইনের সুই আমাদের বাম হাত বা ডান হাতে দেয়। সেই স্যালাইন গুলো রক্তের সাথে মিশে সারা শরীরে ছড়িয়ে যায় আর আমরা অনেক সময় সুস্থ হয়ে উঠি। এখানে কথা হচ্ছিলো এনার্জির যা হয়তো স্যালাইনের সাথে মিলানো যায় না, এনার্জি অনেক জায়গা থেকে পাওয়া যায়। প্রথমেই রয়েছে প্রাকৃতিক এনার্জি যা কাল্টিবেশনের মাধ্যমে গ্রহন করা হয়ে থাকে প্রকৃতি থেকে। দ্বিতীয়তে রয়েছে এনার্জি স্টোন , ধরতে গেলে এই এনার্জি স্টোনও প্রকৃতি থেকেই তৈরি হয়। এক একটি এনার্জি স্টোন তৈরি হতে সময় নেয় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বছর, তাছাড়াও এই স্টোন গুলো সিলবার কয়েন দ্বারা একচেন্জ করা যায়। স্টোন গুলোর মূল্য তাঁদের বয়ষ অনুযায়ী করা হয়।
দ্বীপক আজকে ক্যান্টিনে আসার পরে দেখে নিলো সেই ছেলে গুলো আছে নাকি নেই, যখন দেখলো ক্যান্টি একটি ছেলে ছাড়া আর কেউই নেই তখন তাঁর মনে পড়লো সে দেরী করে ফেলেছি। এতক্ষন প্রায় সব স্টুডেন্ট নাস্তা করে তাঁদের নিজ নিজ ক্লাস রুমে চলে গিয়েছে।
>- এই ছেলেটিকে তো সেই যার সাথে আমার সেই মার্কেটে ঝামেলা হয়েছিলো,,,,( দ্বীপক )
দ্বীপক মনে মনে এই কথাই ভাবছিলো আর সে ছেলেটির দিকে এগিয়ে গেলো, দ্বীপকের সামনে এখন যে ছেলেটি বসে ছিলো সে আর কেউ নয় সে ছিলো নিয়ন। নিয়ন অবশ্য দ্বীপককে এখানে দেখে অবাকই হয়েছি যা তাঁর চেহেরা দেখেই বুঝা যাচ্ছিলো। নিয়ন হয়তো এই সময় দ্বীপক কে এই জায়গায় পাবে ভাবতে পারে নাই, কিন্তু নিয়ন যখন দেখলো দ্বীপক তাঁর পাশ দিয়ে চলে যাওয়ার সময়ও তাকায় নাই তখন নিয়ন ভাবে হয়তো দ্বীপক তাঁকে চিনতে পারে নিই,,,
>- আমার মনে হচ্ছে দ্বীপক আমাকে চিনতে পারে নিই, যাক ভালোই হইছে সে চিনে নাই আমারে,,,,( নিয়ন )
নিয়ন মনে মনে কথা গুলো বলছিলো যদিও সে খানিকটা চিন্তিত রয়েছে যে সত্যি দ্বীপক তাকে চিনেছে হ্যা বা না,,
>- ছেলেটি হয়তো আমাকে চিনতে পারি নেই তাই কিছু বলে নাই,সেদিন কি হয়েছিলো তা আমি জানি না। যা নীলার ঘুম ভাঙার পরেই জানতে পারবো,,,, ( দ্বীপক )
দ্বীপকও ভাবছিলো নিয়ন তাঁকে চিনে নাই যার ফলে তাঁরা দুইজনেই কোনো কথা না বলে খাওয়া শেষ করে ক্লাস রুমের দিকে যেতে লাগলো, ক্যান্টিন থেকে আসার সময় স্যার জ্যামস দ্বীপকের হাতে একটি কার্ড ধরিয়ে দেন। যা মূলত দ্বীপকের একাডেমির স্টুডেন্ট আইডি কার্ড ছিলো,কার্ডেই দ্বীপকের ক্লাস রুমের নাম এবং দ্বীপকের সিট নাম্বার দেওয়া ছিলো। ক্লাস F যা সেই কার্ডে উল্লেখ ছিলো তাই দ্বীপক ক্লাস রুম F এর দিকে যায় এবং কিছুক্ষনের মধ্যে পেয়েও যায়।
ক্লাস রুমে একজন শিক্ষক পাঠদানরত অবস্থায় ছিলো সেই সময় দ্বীপকের আগমনে তিনি বোধহয় খানিকটা বিরক্ত হয়েছেন যা তাঁর চেহেরা দেখেই বুঝা যাচ্ছে,, তিনি খানিকটা মুখ কালো করে দ্বীপকের দিকে তাঁকালেন,,,
>- তুমি কি নতুন স্টুডেন্ট?,,, ( স্যার )
দ্বীপক কোনো কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়ালো,ওনার প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ায় ওনি বিরক্ত হয়ে দ্বীপককে ভিতরে আসতে বললেন। দ্বীপক তাঁর সিট নাম্বার অনুযায়ী বসে পড়লো, ভাগ্য ক্রমে তাঁর সিটটি পড়েছে জানালার সাথে যার ফলে স্যারদের বোরিং ক্লাস সে অনায়াসেই কাঁটিয়ে দিতে পারবে বলে মনে মনে খুশি হলো,,
>- তোমাদের কালকের কাজ হলো এই দুইটি স্পেল প্র্যাকটিস করা, সবার এট্টিবিউট অনুযায়ী এই স্পেল কাজ করবে আর এই যে নতুন ছেলে তোমার কোনো সহপাঠী থেকে স্পেল গুলো লিখে নাও,তাহলে আমাদের আজকের ক্লাস এইখানে শেষ,,,, ( স্যার )
স্যার চলে যাওয়ার সাথে সাথে অনেক ছেলে মেয়ে একে অপরের সাথে কথা বলা শুরু করে যার ফলে সেখানে আর বসার মতো অবস্হা ছিলো না, দ্বীপক বিরক্ত হয়ে যখন উঠতে যাবে তখন কেউ একজন তাঁর দিকে হাত বাড়ায়,,
>- হাই আমার নাম আকাশ, তুমি নিশ্চয়ই দ্বীপক?,,,( আকাশ )
কে হাত বাড়িয়েছে দ্বীপক তা দেখার জন্য তাঁর মাথা উঁচু করে তখন সে দেখতে পায় তাঁর সামনে একটি ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেটি লম্বায় দ্বীপক থেকে কিছুটা খাটো, বয়স প্রায় ১৭ হবে ছেলেটির। এখানের সব ছেলে মেয়েই সাদা সুন্দর আর এখানে একমাএ দ্বীপকই শ্যামলা, যার ফলে সবাই কেমন করে তাঁকিয়ে আছে বিশেষ করে মেয়েরা,তাঁরা জেনো কোনোদিন শ্যামলা ছেলে দেখে নিই,,
>- আমিই দ্বীপক,,( দ্বীপক )
দ্বীপক এই কথা বলে ছেলেটিকে পাশ কাঁটিয়ে চলে গেলো, ছেলেটি দ্বীপকের যাওয়ার দিকেই তাঁকিয়ে ছিলো। একটি দীর্ঘ শ্বাস পেলে ছেলেটি নিজের সীটে ফিরে গেলো, এই দিকে দ্বীপকের মন চলছিলো অন্য কিছু তাঁর আজ কিছু মনে পড়েছে যা তাঁকে তাঁর ভালোবাসার মানুষটি থেকে আলাদা করেছে। নওরিনের যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিলো সে আর কেউ নই বরং দ্বীপকেরই ব্রেষ্টফ্রেন্ড আকাশের সাথে, ব্রেষ্টফ্রেন্ড হওয়ার কারনে আকাশ জানতো দ্বীপক নওরিনকে ভালোবাসে কিন্তু তাঁর জন্য নওরিন দ্বীপকে ছেড়ে দিয়েছে। নওরিন জানতো দ্বীপক মত্তবিত্ত আর এইদিকে আকাশ ছিলো বড়লোক বাবার সন্তান, আকাশ নওরিনকে পছন্দ করতো তা নওরিন এবং দ্বীপক নিজেও জানতো কিন্তু কিছুই বলে নিই,, আকাশ দ্বীপকের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নওরিনকে বিয়ে করে ফেলে। দ্বীপকের মনে ঘৃণা জন্মাতে শুরু করে আকাশকে নিয়ে, এখন এই আকাশ নামটা শুনলেও তাঁর রাগ উঠে যায়।
কিছুক্ষন পরে ট্রেনিং এর ক্লাস ছিলো তাই এখন সবাই এরিনার দিকে যাচ্ছিলো সেখানে স্যার জ্যামস তাঁদের বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং দিবেন। দ্বীপকও তাঁদের পিছু পিছু যাচ্ছিলো এরিনার দিকে যেহেতু তাঁরও শিখার প্রয়োজন রয়েছে,,সবাই এরিনায় প্রবেশ করার পরে সেখানে দুইজন স্যারের দেখা পাওয়া যায় যার মধ্যে একজন ছিলেন স্যার জ্যামস এবং অন্যজন হলে সেই প্রথম ক্লাস করানো স্যারটি,,
>- আজকে আমরা তোমাদের একটি মিশনে নিয়ে যাবো যেখানে তোমাদের সবাইকে কিচু মন্সটার হান্ট করতে হবে,যে আজকে সবচেয়ে বেশি হত্যা করতে পারবে সে আজ এই সোর্ড ধরার সুযোগ পেতে পারে,,,, ( স্যার জ্যামস )
স্যার জ্যামস সবাইকে একটি সোর্ডের দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো যা একটি বিশালাকৃতির পাথরের বুকে গেঁথে ছিলো, সোর্ডটি একবার ধরে সুযোগ পাবে এই ভেবে সবাই খুশি হলেও কিছু কিছু ছেলে মেয়ের চিন্তা ভাবনা সবার থেকে আলাদা ছিলো,,,
>- স্যার জ্যামস এতো সহজে এই সোর্ডে কারোর হাত পড়তে দিবে না, এখানে নিশ্চয়ই কোনো কারন রয়েছে,,
>- সব একাডেমিতেই বিভিন্ন ধরনের লিজেন্ডারী আইটেম রয়েছে, এই সোর্ড এই একাডেমির একমাএ লিজেন্ডারী আইটেম যা গত কয়েকশো বছর ধরে এখানে রয়েছে,,
>- আমার তো খুশিই লাগছে আমি একটা লিজকে সোর্ড হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখতে পারবো,,,
এখানে মোট ১৭ জন স্টুডেন্ট রয়েছে যাদের সবার চিন্তা ভাবনা আলাদা আলাদা, এদের মধ্যে কয়েকজন ছাড়া বাকি সবাই ছিলো সোর্ডটি কাছ থেকে দেখার লোভে, আর কয়েকজন যারা ভাবছিলো নিজেদের কিভাবে শক্তিশালী হওয়া যায়,,,
>- এই মন্সটার গুলো হত্যা করতে ভালোই লাগে, আমার পাওয়ার অনেকটাই বৃদ্ধি পায় এই গুলো হত্যা করলে,,
>- আজকে আবারো শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ মিলেছে আমি সবাইকে দেখিয়ে দিবো আমি কতটুকু শক্তিশালি,,
>- আমি জানি না নীলা নামের মেয়েটা কোথায়,তবে এবার দেখা হলে তাঁকে দেখিয়ে দিবো আমি কতটা শক্তিশালী,,,, ( নীয়ন )
>- আমার জন্য এটা প্রথমবার হতে যাচ্ছে, জানি না এখানে কি ধরনের মন্সটার হত্যা করতে হবে। যদিও আমি নার্ভাস কিন্তু আমার কেমন জেনো মন চাচ্ছে মন্সটারের মাংসকে ফ্রাই করে খাওয়ার জন্য,,,, ( দ্বীপক )
এখানে ১৭ জন স্টুডেন্টের মাঝে একেকজনের একেক চিন্তা ভাবনা যাদের মধ্যে দ্বীপক এবং নীয়ন এই দুইজনভ ব্যাতিক্রম ধর্মী চিন্তা করছিলো,একদিকে দ্বীপক ভাবছিলো কিভাবে মন্সটারের মাংস ফ্রাই করে খাবে আর নীয়ন ভাবছিলো কিভাবে সে নীলার থেকে বেশি শক্তিশালী হবে,,
********
আমাদের সিন চেঞ্জ হয়ে গেলে আমরা দেখতে পাই একজন লোক অন্ধকার একটি জায়গায় মধ্য দিয়ে হেঁটে আসছি, লোকটির পিছনে আরো কয়েকজন লোক ছিলো যারা ওনাকে লক্ষ করে হেঁটে আসছিলো,, একটি শিকল পড়া লোকের সামনে এসে লোক গুলো দাঁড়ালো।
>- তোমরা হয়তো ভুলে যাচ্ছো তোমরা কাকে বন্ধি করেছো,,, ( শিকল পড়া লোকটি )
শিকল পড়া লোকটি অনেকটা উচ্চ স্বরে কথাটা বলছিলো, যা শুনেও না শুনার ভান করে সদ্ব আসা ব্যাক্তি গুলো চলে যাচ্চিলো।
>- তোমরা কখনোই সেই সোর্ডের মালিকানা পাবে না, আমার দুই প্রিন্স সেই সোর্ডের একমাএ উত্তরাধিকারী,,( শিকল পড়া লোকটি )
,,,,,,,,,,
,,,,,,
,,
,,
To Be Continued